বাচ্চাদের কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়
পোস্ট সূচীপত্রঃ বাচ্চাদের কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়
- বাচ্চাদের কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়
- কৃমি এর সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা
- শিশু কৃমি দ্বারা আক্রান্ত কিনা বুঝার উপায়
- কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার লক্ষন
- বাচ্চাদের কৃমি হওয়ার কারণ সমূহ
- কৃমি থেকে বাচার জন্য চিকিৎসা
- বাচ্চাদের ওপরে কৃমির ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- কৃমি প্রতিরোধের করার সহজ উপায়
- বাচ্চাদের শরীরের ওপর কৃমির ভয়াবহতা
- শেষ কথাঃ বাচ্চাদের কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়
বাচ্চাদের কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায়
- কাঁচা পেঁপে মহা ঔষধঃ বেশি করে কাঁচা পেঁপে খাওয়া কারণ কাঁচা পেঁপের মধ্যে পাপাই নামক এক ধরনের এনজাইম থাকে যে কৃমি প্রতিশোধক হিসেবে কাজ করে থাকে। এই পেঁপে কখনো কাঁচা সালাতের মাধ্যমে খাওয়ানো যেতে পারে অথবা খিচুড়ির সাথে মিশিয়ে অথবা তা ফুটিয়ে নরম করে শুধু শুধু লবণ দিয়ে খাওয়ায় দিলে অনেকটা আরাম পাওয়া যেতে পারে।
- রসুন এর ব্যাবহারঃ প্রতিদিন খাবারের মধ্যে কিছু পরিমাণ রসুন রাখা উচিত কারণ রসুন হচ্ছে অ্যান্টি প্যারাসাইটিক অর্থাৎ রসুনের উপস্থিতিতে যে কোন প্যারাসাইটিক জীবাণু য বেশিক্ষণ যুদ্ধ করে থাকতে পারে না।
- আদা ও লং এর রসঃ খাদ্যের মধ্যে প্রতিনিয়ত লং এবং আদা রাখা উচিত কারণ লং এবং আদা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে ফলে অন্তরে উপস্থিত কৃমির জন্য তা কি সমস্যার কারণ হতে পারে তাদের পুষ্টি ঘাটতি করতে পারে ফলে তাদের মধ্যে সংক্রমণতা কমতে থাকতে পারে।
- হলুদ এর জাদুঃ কাঁচা হলুদ অথবা হলুদের গুঁড়া যেকোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়ার বা পরজীবীর জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকারক বলে প্রমাণিত হয় কারণ এতেই আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কিনা বিভিন্ন ধরনের পরজীবীদের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।।
- নারিকেলের বিভিন্ন ব্যাবহারঃ নারিকেলের কুচি অথবা নারকেল খেয়েও অনেক সময় কৃমি জাতীয় পরজীবীদের প্রতিরোধ করা হয়ে থাকে। নারিকেলে থাকে লরিক এসিড ও ক্যাপরাইক এসিড যা কৃমি ও অন্যান্য পরজীবীর বিরুদ্ধে কাজ করে।
- কুমড়ার বীজঃ শিশুদের জন্য কুমড়োর বীজের তুলনা হয় না। বীজে রয়েছে কিউকারবিটাসিন নামক এক ধরনের পদার্থ যা কিনা যেকোনো ধরনের পরজীবীর বিপরীতে কাজ করে থাকে। তাছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
- গাজর হতে পারে প্রতিরক্ষকঃ যদি কোন বাচ্চা উপরোক্ত কোন খাবার খেতে না পারে তবে প্রতিরোধক হিসেবে তাদেরকে গাজর খাওয়ানো যেতে পারে কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন এ যা কিনা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীরের মধ্যে বাড়িকে তোলে সে ক্ষেত্রে পরজীবীদের বিপরীতে প্রতিরোধক মূলক ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য গাজরের বিকল্প নেই।
কৃমি এর সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা
কৃমি হলো এক ধরনের পরজীবী যা মানুষের অন্তস্থ অন্তরে বসবাস করে সেখান থেকে পুষ্টি উপার্জন করে এবং তার বংশবিস্তার করে থাকে। মূলত অনেক ছোট আকারের হয় এবং বড় উভয় আকারেরই হতে পারে। কয় ধরনের হয়ে থাকে কিন্তু শিশুদের মধ্যে ফিতা কৃমি ও সুতা কৃমি এর সংখ্যা বেশি দেখা যায় । ফিতা কৃমিকে চ্যাপ্টা কৃমিও বলা হয়ে থাকে। এদের দৈর্ঘ্য সাধারণত কয়েক ইঞ্চি থেকে ৪০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। এরা পরজীবী হওয়ার কারণে সবসময় অন্য প্রাণীর অন্তরেই পেতে পাওয়া যায়। একটি নির্দিষ্ট সীমানা পার করার পর তাদের উপদ্রব এর বাহ্যিক প্রভাব দেখা যায়।
আরো পড়ুন ঃ বাচ্চাদের চুলকানির অজানা কারণ।
শিশু কৃমি দ্বারা আক্রান্ত কিনা বুঝার উপায়
কৃমির পরিমাণ অনেক অল্প পরিসরে থাকলে অনেক সময় এর উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে সে ক্ষেত্রে আমাদের বিশেষ সচেতনতার সাথে শিশুদের প্রতি যত্নবান হতে হবে। বাচ্চাদের কৃমি দূর করার ঘরোয়া উপায় জানা থাকলে সহজেই এর বিস্তার প্রতিহার করা সম্ভব।
শিশুদের মধ্যে কৃমি আছে কিনা তা কিভাবে বুঝবেন নিচে দেওয়া হল;
- শিশুদের মধ্যে মুখে লালা এর পরিমাণ বেড়ে যাবে ।
-
শিশুদের মুখে থুথু এর পরিমাণও বেড়ে যাবে কারণ মুখে লালা সংক্রমণ বাড়তে
থাকবে।
- শিশুদের মল প্রচন্ড দুর্গন্ধযুক্ত হবে কেননা পেটের মধ্যে থাকা ক্রিমি সঠিকভাবে খাদ্য পরিপাক কে বাধাগ্রস্থ করে।
- স্ত্রী ফিতা কৃমি সাধারণত মলদ্বারে এসে ডিম পাড়ে এজন্য বাচ্চাদের মলদ্বারে জ্বালাপোড়া ব্যথা এবং অস্বস্তি সৃষ্টি হতে পারে।
কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার লক্ষন
- পেটে ব্যথা
- ডায়রিয়া
- অবসাদ
- বমি বমি ভাব
- পেট ফুলে যাওয়া
- মেজাজ মিজাজ খিট মিটে হওয়া
- খাবারের প্রতি অনীহা
- কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া
- ঘন ঘন গ্যাস ও পেট ফাঁপা
- আচরণগত পরিবর্তন।
বাচ্চাদের কৃমি হওয়ার কারণ সমূহ
- পৃষ্ঠতলের সংস্পর্শে থাকা
- ফলমূল না ধুয়ে খেয়ে ফেলা
- পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে
-
আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকলে
-
যে কোন জায়গায় যাতায়াতের সুবিধা থাকলে
- ময়লা পানি পান করলে
- ভালোভাবে ফুটিয়ে কোন খাবার না খেলে।
আরো পড়ুন ঃ বাচ্চাদের চুলকানির অজানা কারণ।
কৃমির থেকে বাচার জন্য চিকিৎসা
বাচ্চাদের ওপরে কৃমির ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কৃমি প্রতিরোধ করার সহজ উপায়
- সর্বদা পরিষ্কার খাদ্য গ্রহনঃ কৃমি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সবচেয়ে প্রধান রাস্তা হচ্ছে মুখঃবিবর। সুতরাং প্রথমেই বাচ্চা কিভাবে এবং কোন কোন জিনিস খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করছে তার প্রতি নজর দিতে হবে। বাচ্চার খাদ্য অবশ্যই সব সময় ফুটিয়ে এবং ধুয়ে খাওয়াতে হয়। তাছাড়া প্রয়োজনে সব খাদ্য গরম করে জীবাণুমুক্ত করে খেলে সর্বোত্তম ফলাফল পাওয়া যায়।
- ঘরবাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাঃ সুস্থ ও স্বাভাবিক প্রত্যেকটি বাসায় সর্বদা উচিত পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন করে রাখতে প্রয়োজনে প্রত্যেকদিন ডিটারজেন্ট বা ফিনাইল দিয়ে ঘরের মেঝে যথাযথভাবে পরিষ্কার করার প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগ দেওয়া উচিত কেননা এইসব কৃমি অপরিষ্কার জায়গাতেই বাসা পেতে থাকে এবং পরবর্তীতে পরজীবী হিসেবে অন্যদের শরীরে আশ্রয় গ্রহণ করে।
- হাত ধুয়ে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলাঃ অবশ্যই ছোটবেলা থেকেই শিশুদের শেখানো উচিত হাত এবং হাতের নখ ভালো করে পরিষ্কার করে খেতে বসা এবং বাবা মারও উচিত সেই সাথে নিজেদেরও একই অভ্যাস গড়ে তোলা কেননা হাতের মাধ্যমে বিভিন্ন পরজীবী শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে থাকে।
- মলত্যাগের পরে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলাঃ প্রত্যেকটি পরজীবী অথবা ব্যাকটেরিয়া প্রাণীর শরীরের মলদ্বারে বসবাস করে থাকে। তাই শিশুসহ বাড়ি প্রত্যেককেই অবশ্যই মলত্যাগের পরে ভালোভাবে হ্যান্ডওয়াশ বা সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। কারণ এই অপরিষ্কার হাত থেকেই পরজীবীরা পুনরায় শরীরে প্রবেশ করতে পারে অথবা অন্যদের আক্রান্ত করতে পারে।
- নখ ছোট রাখাঃ অনেক ধরনের কৃমি রয়েছে যা কিনা পায়ের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে সেক্ষেত্রে অবশ্যই বাচ্চাদের খালিপায়ে হাঁটতে দেওয়া যাবে না এবং সর্বদা তাদের হাত এবং পায়ের নখ ছোট করে রাখতে হবে।
- বিশুদ্ধ পানি পান করাঃ প্রত্যেকটি পরিবারের উচিত শিশুসহ বাড়ির সকলের পানি ফুটিয়ে তা ঠান্ডা করে ফিল্টার করে পান করা কেননা বাইরে থেকে পানির মাধ্যমে পরজীবীরা অতি সহজেই শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করে থাকে সেক্ষেত্রে বিশুদ্ধ পানি পান করা আবশ্যক।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url