পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির পদ্ধতি- PCOS
পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির পদ্ধতি ও এর উৎপত্তির কারণ ও বিস্তার এর
সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে খুব সহজেই এই সমস্যাকে একটি সীমাবদ্ধতার মধ্যে নিয়ে
আসা সম্ভব। পলিসিস্টিক ওভারি মূলত মেয়েদের জরায়ুগত একটি সমস্যা যা নির্মল
যোগ্য।
পলিসিস্টিক ওভারি কখনোই খুব জটিল কোন বিষয় নয়। যদি সঠিক নিয়ম ও নীতির মাধ্যমে
জীবন পরিচালনা করা হয় তাহলে খুব সহজেই এটি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। চলুন
জেনে নেওয়া যাক ওভারি থেকে মুক্তির বিস্তারিত পদ্ধতি গুলো।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির পদ্ধতি
- পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির পদ্ধতি
-
পলিসিস্টিক ওভারি এর প্রধান কারণ সমূহ
- পিসিওয়েস এর সাধারণ লক্ষণ ও সতর্কতা
-
পিসিওএস এর রোগীর জন্য সঠিক খাদ্য পরিকল্পনা
-
ব্যায়ামের মাধ্যমে পিসিওএস এর প্রতিকার
-
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে পিসিওএস এর প্রভাব
-
হরমোন ব্যালেন্স করার সঠিক পদ্ধতি
-
কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া আবশ্যক
-
পলিসিস্টিক ওভারি মুক্তিতে যে সকল ভুল এড়িয়ে চলতে হবে
- শেষ কথা
পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির পদ্ধতি
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম তথা pcos , নারীরা যে সকল সংসার সম্মুখীন হয়
তাদের মধ্যে অন্যতম হলেও এই পিসিওএস। পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির জন্য
সর্বোত্তম উপায় হল সঠিক পদ্ধতিতে নিজের জীবন পরিচালনা করা এবং স্বাস্থ্যসম্মত
খাদ্য গ্রহণ করা।
পলিসিস্টিক ওভারি মূলত একটি মাল্টিফ্যাক্টরিয়াল হরমোনজনিত সমস্যা। যেখানে
ডিম্বাশয়ের কার্যক্রম, হরমোনের ভারসাম্য ও মেটাবলিজম একসাথে প্রভাবিত হয়।
পলিটিক ওভার এর কারণে ডিম্বাশয় ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয় যা নারীর
স্বাস্থ্যর এর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ । পিসিএস এর কারণে ওভারিয়ান
ফলিস্লিস যা ফার্টিলাইজেশন এর জন্য ডিম তৈরি করে থাকে তার বৃদ্ধি কমিয়ে
দেয়। এর কারণে ওভারের অংশগুলো মুক্ত হতে অক্ষম হয় এবং মাসিকে অনিয়ন্ত্রিতা
দেখা যায়।
পলিসিস্টিয়ান ওভারি মূলত একটি হরমোন জনিত সমস্যা হওয়ার কারণে এর থেকে
মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করলে অনেকটাই শরীরের
স্বাভাবিকত্ব ফিরিয়ে আনা যায় । চলুন দেখে নেওয়া যাক লক্ষণ কারণ ও চিকিৎসা
এর পদ্ধতি সমূহ।
পলিসিস্টিক ওভারি এর প্রধান কারণ সমূহ
পলিসিসটিক ওভারি বা পিসিওয়ে স মূলত নারীদের ওভারিতে হওয়া একটি অস্বাভাবিক ঘটনার
সংগঠন। এটি কোন সুনির্দিষ্ট কারণ জানা না গেলেও কিছু গবেষণা থেকে এর তুলনামূলক
কারণগুলো বের করা হয়েছে। কিছু কারণ আলোচনা করা হলোঃ
- হরমোনের অসামঞ্জস্যতা ঃ প্রত্যেক মানুষের শরীরে হরমোনেশন হয়ে থাকে কিন্তু লিঙ্গ ভেদে পুরুষ এবং স্ত্রীদের হরমোনের মধ্যে কিছু তারতম আছে। মূলত ছেলেদের দেহে ক্ষরণ হওয়া এন্ড্রোজেন হরমোন যখন নারীদের শরীরে বেশি পরিমাণে নিঃসরণ হয় তখন ডিম্বাশয়ের ডিম তৈরি হওয়া এবং পরিপক্কতায় বাধা প্রদান করে । মূলত তখনই এই সিনড্রোম দেখা যায়।
-
জেনেটিক প্রভাব ঃ মূলত পরিবারে অন্যান্য সদস্যের মধ্যে এই
সমস্যা থাকলে অন্যান্য সদস্যদের ঝুঁকি বেড়ে যায়। একে পলিজেনিক ডিসঅর্ডার
বলা হয়ে থাকে।
-
ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্ট ঃ ইনসুলিন মূলত খাদ্যের শর্করা ভাঙ্গে এবং
পরিপাকে সাহায্য করে। কিন্তু অনেক সময় শরীরে সঠিক পরিমাণ ইনসুলিন তৈরি
না হলে রক্তে এর মাত্রা বেড়ে যায় যা ডিম্বাশয়ের টেস্টোড়ন নামক এক ধরনের
হরমোনের বৃদ্ধি ঘটায় যা ওভারিতে ছোট ছোট সিস্ট তৈরি করে।
-
অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনঃ অনেক সময় নারীরা সঠিক পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ না
করার কারণে এবং শারীরিক সুস্থতা না বজায় রাখার কারণে অভ্যন্তরীণ
অঙ্গ-প্রতঙ্গে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ফলে ওভারি সহ বিভিন্ন সিস্ট দেখা
যায়।
পিসিওয়েস এর সাধারণ লক্ষণ ও সতর্কতা
সাধারণত কিছু বিশেষ লক্ষণ প্রকাশের মাধ্যমে জানা যায় কোন নারী স্টেসটিক ওভারি
অর্থাৎ পি সি ও এস দ্বারা আক্রান্ত কিনা। অনেক সময় লক্ষণগুলো দেখেও না দেখা করে
রেখে দেওয়ার কারণে এর ভয়াবহতা বাড়তে থাকে। সাধারণত লক্ষণ গুলো হলঃ
-
মাসিক অনিয়ন্ত্রিতাঃ প্রধান লক্ষণ গুলোর মধ্যে মাসিক অনিয়ন্ত্রিতা
হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রসেসটিক ওভার এর জন্য শরীরে
অ্যাড্রিনাল হরমোন বৃদ্ধির কারণে ডিম তৈরিতে বাধাগ্রস্ত হয় ফলে মাসিকে
আনিয়ন্ত্রণতা দেখা যায়।
- মুখে লোম গজানোঃ ছেলেদের গ্রোথ জন্য প্রধান যে হরমোন দায়ী থাকে তা পিসিওএস এ রোগীদের শরীরে বৃদ্ধি পায় ফলে ছেলেদের দাড়ি গজানোর মতো কিছু কিছু লক্ষণ মেয়েদের মুখে দেখা যায়। মুখে নিচের অংশে একটু মোটা আকারের লোম বের হয়।
-
পেটে ব্যথা ঃ পলসেস্টিক সিনড্রোমের কারণে ওভারিতে ছোট ছোট সিস্ট
দেখা যায়। যা কোন বিশেষ পরিমাণে ক্ষতি না করলেও মাঝেমধ্যে প্রধান সৃষ্টি করে
।
-
হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস ঃ পিসি ও এস এর রোগীদের শরীরে হজমের
সমস্যা তৈরি হয় ফলে অনেক সময় মেটাবলিজম রেট অনেক হাই থাকে অথবা অনেক
লো হয়ে যায় ফলে রোগের শারীরিক ওজনে হ্রাস বা বৃদ্ধি দেখা যায়।
-
গর্ভধারণের সমস্যা ঃ ডিম পরিপক্ক না হওয়ার কারণে সেখানে জায়গা
সৃষ্টি হতে পারে না ফলে গর্ভধারণের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
-
চুল পড়া বা টাক হয়ে যাওয়া ঃ পুরুষদের মত মাথার সামনের দিকে অর্থাৎ
কপালে চুলগুলো কমতে শুরু করে।
-
ব্রণ ও তৈলাক্ত ত্বকঃ হরমোনের অসামঞ্জস্যতার কারণে মুখে বিভিন্ন ধরনের
তৈলাক্ত দেখা যায় যার মধ্যে ময়লা ও জীবাণু আক্রমণের কারণে ব্রণ তৈরি
হয়।
-
ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্ট ঃ এটি টাইপ টু ডায়াবেটিসের
ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
সতর্কতা
- মাসিক যদি তিন মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকে তাহলে অবশ্যই এ বিষয়ে সতর্কতা তৈরি করতে হবে।
-
দীর্ঘদিন যাবৎ গর্ভধারণের চেষ্টায় ব্যর্থ হলে পলিসিস্টিক ওভারি হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে।
-
হঠাৎ শরীরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দানা এবং লোম বের হতে শুরু করে।
-
ওজনের মধ্যে বেশ তারা তম দেখা যায়। কখনো রোগী অনেক বেশি স্থূলতা অর্জন করতে
পারে আবার কখনো ওজনের হ্রাস পেতে পারে।
-
ডায়াবেটিস অথবা উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে।
পিসিওএস এর রোগীর জন্য সঠিক খাদ্য পরিকল্পনা
একজন পিসিওএস রোগের জন্য সঠিক খাদ্য বন্টন অত্যন্ত জরুরি কেননা শুধুমাত্র খাদ্য
শরীরের অভ্যন্তরীণ হরমোনের ব্যালেন্স ঠিক করতে পারে এবং ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্ট
কমাতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক একজন পিসিএস রোগীর জন্য কোন
সকল খাদ্য পরিকল্পনা প্রয়োজনঃ
-
প্রধান খাদ্য হিসেবে লো গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স (Low GI) যাতে করে রক্তের
শর্করার হার ধীরে ধীরে বাড়ে।
-
উচ্চ ফাইবার অথবা আশযুক্ত খাবার বেশি করে খেতে হবে।
-
হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য নীল প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণ
করতে হবে।
-
যেকোনো ধরনের ডুবা তেলে ভাজা অথবা প্রোসেস করা খাদ্য এড়িয়ে চলতে
হবে।
-
ওজন নিয়ন্ত্রণ ও শারীরিক কার্যক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন
যে সকল খাদ্য পিসিওয়েস বডির জন্য উপযুক্ত তা হলঃ
-
শাকসবজি ঃ যেকোনো ধরনের সবুজ শাকসবজি অথবা বিভিন্ন ধরনের সবজির
মিশ্রণ কে সালাত হিসেবে গ্রহণ করলে হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক থাকে।
-
ফল হিসেবে আপেল, নাশপাতি , কমলা এ সকল ফল খেতে পারবেন কিন্তু কলা , কাঁঠাল ,
আঙুর বেশি খাওয়া যাবে না কারণ এতে জিআই বেশি থাকে।
- ডালঃ যে কোন ধরনের ডাল যেমন মসুর ডাল , মুগ ডাল ,ওটস , লাল একটা রুটি এ সকল খাদ্য গ্রহণ করতে পারবে।
-
ফ্যাটঃ স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যেমন বাদাম , চিয়া সিড , ফ্লাক্সিড ।
-
প্রোটিনঃ ডিমের সাদা অংশ , মুরগির মাংস , মাছ গ্রহণ করতে
পারবে কিন্তু বেশি লাল মাংস গ্রহণ করা যাবে না।
ব্যায়ামের মাধ্যমে পিসিওয়েস এর প্রতিকার
ব্যায়াম ভাষার পরিশ্রম করা যেগুলো সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত
স্বাস্থ্যসম্মত। কেননা ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়
, হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক থাকে , খাদ্য পরিপাক সঠিকভাবে হয় ইন্সুলিন
রেজিস্ট্যান্ট হয় না , মানুষের চলাচলের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
, বৃদ্ধির কার্যপ্রদ্ধতির স্বাভাবিক থাকে।অর্থাৎ সঠিক উপায় যদি ব্যায়াম
করে জীবন পরিচালনা করা যায় বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া
সম্ভব।
একজন পিসিওএস রোগীর জন্য ব্যায়ামের চেয়ে ভালো কোন বিকল্প নেই। একে নিয়ম
তান্ত্রিক জীবনযাপনের মধ্যে যে সকল ধরনের ব্যায়াম করলে তাদের শরীর সুস্থ থাকবে
তার ব্যাপারে আলোচনা করা হলোঃ
কারডীক এক্সারসাইজঃ সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট
-
প্রতিদিন সকালে অথবা বিকালে দ্রুত হাঁটা
- জিমে গিয়ে জগিং করা
- সাইকেলিং করা
- সাঁতার কাটা
- হালকা পুষ এন্ড আপ করা
- হালকা ওজন তোলা
এছাড়া জিমে গিয়ে হালকা-পাতলা ট্রেনারের দ্বারা ব্যায়াম বা কসরত করা এবং
মেডিটেশন নেওয়া। এর মাধ্যমে হরমোন নিঃসরণ এর সুবিধা হয় আবার স্ট্রেস কমায়
।
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে পিসিওএস এর প্রভাব
পিসিওএস মূলত নারীদের ওভারিতে হওয়া এক ধরনের অস্বাভাবিক অবস্থা যার
প্রভাব প্রত্যেকটি নারীর দেহে বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। মূলত শারীরিক ও মানসিক
স্বাস্থ্যের উপরে এর ব্যবহার প্রভাব দেখা যায়। শারীরিক স্বাস্থ্য সঠিক খাদ্য
পরিকল্পনার মাধ্যমে নির্মল করা গেলেও মানুষের স্বাস্থ্যের উপরে যে সকল
প্রভাব পড়ে তা সহজে নির্মাণ করা সম্ভব হয় না।
শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরে প্রভাবঃ
- অনিয়ন্ত্রিত মাসিক হয়
-
নিয়মিত ডিম পরিস্ফুটন হয় না।
-
ছেলেদের ন্যায় দাড়ি বা গোঁফ গজায়
- শারীরিক স্থূলতা দেখা দিতে পারে
-
সে যে বিভিন্ন অংশের র্যাশ হয়
-
অনেক সহজে যে কোনো অসুখ দ্বারা আক্রান্ত হয়
-
খাদ্য পরিপাকে সমস্যা সৃষ্টি হয়
মানসিক স্বাস্থ্যঃ
-
মন মেজাজ সবসময় খিটখিটে থাকে
-
শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকার কারণে মানসিক অস্থিরতা তৈরি হয়
-
রোগী বেশিরভাগ সময় ডিপ্রেশনে থাকে
- রাতে নিয়মিত ঘুম হয় না
- নিজেকে মূল্যায়ন কম করে।
-
পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না
- হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে স্ট্রেস বা উদ্বেগ বেড়ে যায়
হরমোন ব্যালেন্স করার সঠিক পদ্ধতি
পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির পদ্ধতি জানতে হরমন ব্যালেন্স করতে হলে সর্বপ্রথম
খাদ্য ঠিক করতে হবে। যদি খাদ্যে বেশি পরিমাণে শ্বাস ফাইবার জাতীয় খাদ্য থাকে
তাহলে তা সহজে পরিপাক হয়ে যায় বলে হরমোনের ব্যালেন্স ঠিক থাকে। অতঃপর
পিসিওএস রোগীদের ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্টের কারণে উচ্চ চিনি অথবা সুক্রোজ
টাইপ খাদক পরিহার করলে হরমোনের ব্যালেন্স ঠিক থাকবে । এর সাথে প্রচুর পরিমাণ এই
ফল খেতে হবে।
খাদ্য পরিকল্পনার পাশাপাশি সঠিকভাবে ব্যায়াম করতে হবে এবং এবং খেয়াল রাখতে
হবে যেন রোগী সঠিক সময়ে বিশ্রাম নেয়। কেননা ঘুমের মাধ্যমে শারীরিক
ব্যালান্স ঠিক হয়। যেকোনো ধরনের অতিরিক্ত চিন্তা এবং দুশ্চিন্তা উভয় পরিহার
করতে হবে । অতিরিক্ত মানসিক চাপ নেওয়া যাবে না ।
কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া আবশ্যক
পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির পদ্ধতি হিসেবে ঘরোয়া কিছু উপায় প্রয়োগ করলেও
এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য চিকিৎসকের চিকিৎসার কোন বিকল্প নেই
। তবে প্রথমে ঘর ভাবে কিছু কথাতে অবলম্বন করলেও প্রসেসটিক ওভারি
বৃদ্ধি করা থামানো যেতে পারে । কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণের আচরণ
দেখা গেলে অবশ্যই সাথে সাথে ডাক্তারের নিকটবর্তী হতে হবে। আচরণগুলো হলঃ
-
অনিয়মিত মাসিক- দীর্ঘদিন যাবত মাসিক এর অনিয়ম দেখা গেলে ডাক্তারের
পরামর্শ নিতে হবে
-
গর্ভধারণের সমস্যা- বিবাহের অনেকদিন পরেও যদি কোন স্ত্রী গর্ভধারণ করতে
সক্ষম না হয় তবে স্ত্রী এবং পুরুষ উভয়কেই ডাক্তারের সংস্পর্শে আসতে হবে
- হরমোন জনিত উপসর্গ- যদি শরীরে অস্বাভাবিক কোন উপসর্গ যেমন গোফ দাড়িবের হওয়া, ব্রণ বের হওয়া , মাথার চুল দ্রুত পড়ে যাওয়া এই সকল দেখা দিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে
-
মেয়েটাবলিজমের সমস্যা - হঠাৎ করে ওজন বৃদ্ধি হলে অথবা হঠাৎ ওজন অনেক
বেশি কমে গেলে অবশ্যই সাথে সাথে ডাক্তারকে দেখাতে হবে এটি পলিসিস্টিক ওভারের
একটি অন্যতম প্রধান উপসর্গ
-
মানসিক সমস্যা- দীর্ঘদিন যাবৎ রাতে ঘুম না হওয়া এবং ডিপ্রেশনে ভোগলে
ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
পলিসিস্টিক ওভারির মুক্তিতে যে সকল ভুল এড়িয়ে চলতে হবে
পলিসিস্টিক ওভারের ক্ষেত্রে যদি সঠিকভাবে জীবনযাত্রা পরিচালনা করা যায় এবং
কিছু নির্দিষ্ট ভুল যদি এড়িয়ে চলা যায় তবে অনেক সহজেই এটা কন্ট্রোল
করা সম্ভব। সচরাচর আমরা কিছু নিত্য ভুল করে থাকি যা হয়তোবা আমরা বুঝতে
পারি না তবে আমাদের অচিরেই আমাদের সমস্যা গুলোকে আরো বৃদ্ধি করতে পারে চলুন
দেখে নেওয়া যাক কোন সকল ভুলগুলো আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে
-
অতিরিক্ত পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করা যাবে না শুধু যতটুকু প্রয়োজন একটি শরীরের
কাজ করার জন্য ততটুকু খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
-
বাইরে যাবতীয় ভাজাপোড়া কোল্ড ড্রিংকস চিপস জাতীয় প্যাকেটজাত পণ্য থেকে
দূরে সরে আসতে হবে
-
কোনভাবে মানসিক শান্তি নষ্ট করা যাবে না । প্রতিদিন রাতে ন্যাচারাল উপায়ে
ঘুমের অভ্যাস তৈরি করতে হবে
-
একেবারে খাবার বাদ দিয়ে ডায়েট করতে হবে না যতটুকু শরীরের জন্য প্রয়োজন
ততটুকু খেতে হবে যেমন বেশি করে শ্বাস জাতীয় খাদ্য খেতে হবে এবং তরল খাদ্য
খেতে হবে
-
খাদ্য হজমের জন্য প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে এবং হাঁটাহাঁটি করতে হবে বেশি
করে
-
অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাদ্য পরিহার করতে হবে
-
দীর্ঘ সময় এক জায়গাতে বসে থাকা যাবে না
- মানসিক স্ট্রেস কমাতে হবে ।
শেষ কথাঃ পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির পদ্ধতি
সর্বমূলে এই পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম তথা পিসিওএস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব
শুধুমাত্র সঠিক ভাবে নিজের জীবন পরিচালনা করে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী
ওষুধ সেবন করে । হয়তো কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা দিতে পারে যেটি কিনা
ভয়ংকর রূপ ধারণ করে সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সকল কাজ সম্পাদন
করলে এর থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব ।
গর্ভধারণের জন্য পিসিওএস একটি হলেও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে যে কোন নারী গর্ভধারণ
করতে পারবে । এই রোগ থেকে সেরে ওঠার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শক্ত
মনোবল তৈরি করা। আপনি যদি বিশেষ করেন যে আপনি এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসবেন
একদিন তবে অবশ্যই আপনি ভয়কে জয় করে প্রসেসটিক ওভারি সিনড্রম থেকে মুক্তি পেতে
পারবেন। যে কোন রোগ থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য সঠিক দৈনন্দিন জীবন ব্যবস্থার
বিকল্প আর কিছুই নেই।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url