হঠাৎ হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায়
হঠাৎ হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে তাৎক্ষণিক কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে যেমন রোগীর মানসিক চাপ কমানো , দ্রুত বড় প্রশ্বাস গ্রহণ ও নিঃশ্বাস ত্যাগ করা , যদি কোন গ্যাসের সমস্যা না থাকে তবে লেবু পানি অথবা তেতুল পানি খাওয়ানো।
হাই প্রেশার কমানোর সবচেয়ে উত্তম মাধ্যম চিকিৎসকের পরামর্শ হলেও প্রাথমিকভাবে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে রবিকে চিকিৎসা উপযোগী করে তোলা সম্ভব । চলুন দেখে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
পোস্ট সূচিপত্র ঃ হঠাৎ হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায়
- হঠাৎ হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায়
-
প্রেসার হাই হয়ে যাওয়ার কারণ সমূহ
-
যে সকল খাবারের জন্য প্রেসার হাই হয়ে থাকে
-
হাই প্রেসার কমাতে প্রাকৃতিক খাদ্য তালিকা
-
হঠাৎ হাইপ্রেসার কমানোর জন্য হাটাহাটি ও ব্যায়ামের ভূমিকা
-
হাই প্রেসার থেকে বাঁচার গোপনীয় টিপস
-
যোগ ব্যায়াম ও মেডিটেশনের প্রভাব হাই প্রেসারে
-
কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে
-
লাইফ স্টাইল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রেসার স্বাভাবিক রাখা
- শেষ কথা
হঠাৎ হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায়
হঠাৎ হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে যে কোনো হাই
প্রেসার রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কিছুটা সবল করে রাখা যায় । কিছু সহজ
নিয়ম নীতিমালা পালন করলে একজন হাই প্রেসারের রোগী এর মারাত্মক ক্ষতি হওয়া থেকে
আটকানো সম্ভব ।
হঠাৎ করে প্রেসার বেড়ে গেলে রোগীকে সর্বপ্রথমে অনেক দীর্ঘ নিঃশেষ গ্রহণ ও ত্যাগ
করতে হবে । অতঃপর ঠান্ডা পানি এবং এর সাথে কিছু পরিমাণ লেবু অথবা তেতুলের রস
মিশিয়ে পান করলে দ্রুত প্রেসার লো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । টক জাতীয়
খাদ্য প্রেসারের জন্য ওষুধ হিসেবে কাজ করে । সেক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের টক
জাতীয় ফল কিছুক্ষণের জন্য প্রেসার নিরাময় করতে সহায়তা করবে ।
এছাড়াও যদি অতি দ্রুত ঠান্ডা পানি দিয়ে মাথা মুছে দেওয়া অথবা মাথায় পানি ঢালা
হয় তবে রোগী কিছুটা সুস্থতা বোধ করে এবং অবশ্যই মাথা হালকা করে দিতে হবে অর্থাৎ
যে কোন চিন্তাভাবনা মুক্ত হয়ে যেতে হবে ।
প্রেসার হাই হয়ে যাওয়ার কারণ সমূহ
প্রেসার বলতে রক্ত চাপ কে বোঝানো হয় । সাধারণত প্রাণীদের কার্যকলাপের জন্য
রক্তচাপের পরিমাণ বেড়ে যায় । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ নিজেই তার রক্তচাপ
বৃদ্ধির জন্য দায়ী থাকে । এই প্রেসার বা রক্তচাপ ভাই হওয়ার কিছু
গুরুত্বপূর্ণ কারণ গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক ঃ
- হার্টে রক্তের চাপ বৃদ্ধি পেলে - যদি কোন কারণবশত কোন মানুষের অভ্যন্তরের রক্তের ফ্লো হার্টে বেড়ে যায় তবে প্রেসার হাই হয়ে যায় ।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ - কোন বিষয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করলে অথবা ভয় পেলে স্ট্রেস হরমোন যেমন এড্রেনাল বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রেসার বেড়ে যায় ।
- শারীরিক স্থূলতা বাড়লে - পর্যাপ্ত পরিমাণে শারীরিক শ্রম না করলে শরীরে যে মেদ জমা হয় তা হৃদ যন্ত্রের ওপরে চাপ সৃষ্টি করে এবং প্রেসার বাড়িয়ে তোলে ।
- কোলেস্টেরল বাড়লে - কোন ব্যক্তি যদি খাবার অতিরিক্ত পরিমাণে মসলা তেল চর্বি গ্রহণ করে তবে তার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাবে এবং তার রক্তের ফ্লো কমিয়ে তুলবে যার কারনে প্রেসার হাই হয়ে যাবে ।
- পরিমাণের চেয়ে বেশি সোডিয়াম গ্রহণ করলে - বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রত্যেকদিন ৫ গ্রাম সোডিয়াম একজন সুস্থ মানুষের জন্য গ্রহণ করা যায় তবে এর চেয়ে বেশি পরিমাণে সোডিয়াম গ্রহণ করলে রক্তের ফ্লো বাড়ায় এবং হৃদ যন্ত্রের উপর চাপ সৃষ্টি করে ।
- অ্যালকোহল অথবা ধূমপান গ্রহণ করলে - ধূমপানে থাকা নিকোটিন ধমনী কে সংকুচিত করে দেয় ফলে রক্তের চাপ বেড়ে যায় এবং প্রেসার হাই হয়ে যায় ।
- পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব - প্রত্যেক মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘুম যদি শরীর গ্রহণ করতে না পারে তবে তা হৃদপিন্ডের এবং কিডনির উপরে ভয়াবহ প্রভাব ফেলে ।
- বয়স বৃদ্ধি পেলে - বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের রক্তের নারী গুলো শক্ত হয়ে যায় ফলে রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং রক্তের চাপ বেড়ে যায় ।
- শারীরিক শ্রম না করলে - যে কোন ব্যক্তি প্রত্যেকদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিশ্রম না করলে রক্তের ফ্ল কমে যায় এবং প্রেসার বেড়ে যায় ।
- ওষুধের প্রভাবে ও প্রেসার হাই হয় - কিছু ওষুধ রয়েছে যেমন স্টেরয়েড জাতীয় অথবা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল এ সকল ওষুধ নিয়ম অনুযায়ী সেবন করলে প্রেশার হায় হয় ।
যে সকল খাবারের জন্য প্রেসার হাই হয়ে থাকে
সাধারণত মানুষের শরীরের অভ্যন্তরীণ সকল কার্যক্রম নির্ভর করে খাদ্য গ্রহণের ওপর । সঠিক খাদ্য জীবনকে সঠিক উপায়ে পরিচালনা করে এবং সকল রোগ বালাই থেকে মুক্ত রাখে ।
কিছু কিছু খাদ্য শরীরে রক্তচাপের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে যেগুলোকে পরিত্যাগ করলে খুব সহজেই হাই প্রেসার থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব । চলুন দেখে নেওয়া যাক ক্ষতিকর কিছু খাদ্যের তালিকা ঃ
- অতিরিক্ত সোডিয়াম যুক্ত খাবার ঃ সবচেয়ে বেশি সোডিয়াম পাওয়া যায় লবণে সেহেতু খাদ্যে লবণ এর মাত্রা পরিমাণ এর চেয়ে বেশি থাকলে রক্তের চাপ বেড়ে যায় ।
- তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার ঃ রান্নাতে অতিরিক্ত তেল , মাংসের মিশ্রিত চর্বি , ডুবা তেলে ভাজা মুখরোচক খাদ্য ।
- সকল ধরনের প্রসেস খাবার ঃ যেগুলো ফরমালিন এবং বিভিন্ন ধরনের গ্যাস রোগের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবত প্রসেস করে রাখা হয় সেই সকল খাদ্য থেকে বিরত থাকতে হবে যেমন সোসেজ , ইনস্ট্যান্ট নুডুলস , চিপস , ফ্রজেন খাবার ইতালি
- ক্যান জাতীয় খাবার ঃ টুনা ফিস , অলিভস , পিকেল ,ক্যানের সুইট কর্ন , বিন , ।
- মিষ্টি জাতীয় খাবার ঃ সকল ধরনের বাইরে কেনা মিষ্টি , চিনি যুক্ত খাবার অথবা শরবত এবং চিনিযুক্ত চা ।
- অ্যালকোহল বা ধূমপান ঃ নিকোটিন জাতীয় এবং এলকোহল জাতীয় সকল খাবার কিডনিতে প্রভাব ফেলে ।
- মাটির নিচের জন্মানো সবজি সমূহ ঃ আলু , কন্দল , ওল , মিষ্টি কুমড়া , এই সকল জাতীয় খাদ্য
- লাল মাংস ঃ অতিরিক্ত পরিমাণে লাল মাংস অর্থাৎ গরুর মাংস খেলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় ফলে হাইপ্রেসার দেখা যায় ।
- অতিরিক্ত ভাজাপোড়া জাতীয় খাদ্য ঃ পিয়াজি , বেগুনি , পাকোড়া , সিঙ্গারা , চপ ।
- টেস্টিং সল্ট ঃ টেস্টিং সল্ট এক্সট্রা করে কোন খাতে ব্যবহার করা যাবে না , চিপস এবং চটকদার খাদ্য থেকে বিরত থাকতে হবে ।
হাই প্রেসার কমাতে প্রাকৃতিক খাদ্য তালিকা
সঠিক খাদ্য গ্রহণ পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা অতি সহজেই হাই প্রেসার কে কমিয়ে নিজের
সুস্বাস্থ্য জীবন যাপন করতে পারি । অনেক সময় দেখা যায় আমাদের হাতের কাছে
অনেক সহজলভ্য খাদ্য রয়েছে যেগুলোতে হাইপ্রেসার কমানোর সকল পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে
কিন্তু আমরা সেগুলোকে অচিরেই অবহেলা করে ফেলি । চলুন দেখে নেয়া যাক কিছু
খাদ্য তালিকা যা হঠাৎ হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে কাজে আসতে
পারে ঃ
- কলা -কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যার রক্তের মধ্যে দ্রবনীয় সোডিয়ামকে কমিয়ে নিয়ে আনতে পারে ।
- চিয়া সীড - অনেক সময় তিসির ভিজে বলা হয়ে থাকে । প্রতিদিন সকালে হালকা কুসুম গরম পানির সাথে চিয়া সীড মিশিয়ে আধাঘন্টা থেকে এক ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে খেয়ে নিলে শরীর রক্ত প্রবাহ মাত্রা সঠিক থাকে ।
- সবুজ শাকসবজি - এতে থাকা মিনারেল হাই প্রেসার কমায়
- বিট রুট -নাইট্রেট অক্সাইড উৎপন্ন করে ফলে শরীরের রক্তনালী শিথিল করে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করে ।
- ওটস - এতে রয়েছে ফাইবার জাতীয় পদার্থ যা রক্তনালী পরিষ্কার রাখে ফলে রক্ত প্রবাহ থাকে ।
- রসুন - প্রাকৃতিকভাবে রক্তনালী প্রশস্ত করে ।
- নারিকেল-নারকেলের পানিতে ইলেকট্রোলাইট থাকে যে ব্লাড সার্কুলেশন ঠিক রাখে
- ফলমূলয় - ফাইবার ও ভিটামিন জাতীয় খাদ্য রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না এবং প্রবাহ মাত্রা স্বাভাবিক রাখে
- টমেটো -টমেটোতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ডালিম অথবা বেদানা তে পাওয়া যায় যার যন্ত্রের ওপরে চাপ কমাতে সাহায্য করে
- মাছ - প্রোটিন জাতীয় খাদ্য যে কোন কাজের জন্য শক্তি যোগায়
- লেবু - ভিটামিন সি এবং অ্যাসিটিক অ্যাসিড ।
- লাউ - অনেকে হালকা এবং আরামদায়ক খাবার যা সহজেই পাচ্চ হয়ে যায় ফলে রক্ত কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে
- বাদাম - এই সকল খাদ্য ও হার্টের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে ।
হঠাৎ হাই প্রেসার কমানোর জন্য হাটাহাটি এবং ব্যায়ামের ভূমিকা
- ব্লাড সার্কুলেশন ঠিক থাকবে
- রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমবে
- শরীরে সকল টক্সিন উপাদান গুলো ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে যাবে
- হৃদ যন্ত্রের উপরে কোন চাপ পড়বে না
- অতিরিক্ত মেদ ঝরে যাবে
- শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকবে
- খাদ্য সহজে হজম হয়ে যাবে ফলে পাকস্থলীতে তে চাপ পড়বে না
হাই প্রেসার থেকে বাঁচার গোপনীয় টিপস
- আপনি যদি সকালে খালি পেটে এক ঘন্টা হাটেন এবং এসে প্রথমে এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম পানিতে এবং লেবু মিশিয়ে রাখেন তবে এটি আপনার ডিটক্স ওয়াটার হিসেবে খেলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে যা প্রেসার কমাতে সাহায্য করে
- প্রতিদিন দুপুর ১২ টার দিকে এক্লাস বিট রুটের শরবত অথবা মরিঙ্গা পাউডার পানির সাথে মিশিয়ে খেলে আপনার শরীরের রক্ত চলাচল অনেক স্বাভাবিক থাকবে কোন জায়গায় জমাট বাঁধবে না ফলে প্রেসার হাই হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকবে না
- অবশ্যই প্রতিদিন রাতের খাবার আটটার মধ্যে যদি কমপ্লিট করে ফেলেন তবে আপনার ঘুমানোর আগে হজম হয়ে যাবে ফলে ঘুমের মধ্যে প্রেসার কম বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না
- যদি কোন সময় বেশি পরিমাণে লাল মাংস খেয়ে ফেলেন তবে কিছুক্ষণ পরে এক লাস্ট লেবু শপথ খেয়ে ফেলবেন যা আপনার হজমে সাহায্য করবে
- প্রেসার হঠাৎ হাই হয়ে গেলে সাথে সাথে তেতুল পানি এক কাপ খেয়ে ফেলবেন যা হৃদ যন্ত্রের রক্ত চলাচলের মাদ্রাসা স্বাভাবিক করে
যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনের প্রভাব হাই প্রেসারে
হাই প্রেসার কমানোর জন্য হাটাহাটির ও ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই । আমাদের
শরীরকে একটি যন্ত্রের সাথে তুলনা করা হয় । যে কোন যন্ত্র কে যদি কোন স্থির
জায়গাতে রেখে দেওয়া হয় তবে কিছুদিন পর তা মরিচার সংলগ্নে এসে নষ্ট হয়ে যায়
ঠিক তেমনি আমাদের দেহ এর মেশিনগুলোকে যদি এক ভাবে ফিরে রেখে দেওয়া হয় তবে
সহজে তার মধ্যে পথ ধরতে শুরু করবে ।
শরীর সুস্থ রাখার জন্য যখন আমরা প্রত্যেকদিন নিয়মমাফিক কিছু সময় অর্থাৎ ৩০ থেকে
৪০ মিনিট হাটাহাটি করি তবে আমাদের দেহের -
আপনি কি হাই প্রেসার থেকে বাঁচতে চান , আপনার কি মনে হয় যে কোন খাদ্য
খেলেই আপনার হঠাৎ প্রেসার হাই হয়ে যাচ্ছে , এবং আপনি আপনার মন মত কোন কিছু
খেতে পারছেন না । এসব নিয়ে ভয়ের কোন কারণ নেই আপনাকে এমন কিছু টিপস আমি
জানিয়ে দিব যার মাধ্যমে আপনি সহজে আপনার ইচ্ছামত জীবন নিয়ে খাওয়া-দাওয়া করতে
পারবেন বিশ্রাম করতে পারবেন এবং আপনার প্রেসার কমেও রাখতে পারবেন । চলুন
দেখে নেওয়া যাক হঠাৎ হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে কোন সকল টিপস
গুলো আপনাদের বাচ্চা তুলতে পারে ঃ
শরীর সুস্থ রাখার প্রধান চাবিকাঠি হল মানসিক স্বস্তি । আপনার মানসিক
স্বাস্থ্যের অবস্থা যদি ঠিক থাকে তবে আপনি অনেক সহজেই আপনার শারীরিক অবস্থারও
উন্নতি হতে পারবেন । মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য আমাদের
প্রত্যেকেরই উচিত একটি নির্দিষ্ট টাইমে নিজেদের সময় দেওয়া।
নিজেদের সময় বলতে আপনি নিজের জন্য যখন কোন কিছু করবেন সেটা কে বোঝানো হয়।
বিশেষ করে আপনি যদি দিনে কিছু সময়ের জন্য মেডিটেশন অর্থাৎ নিজের সকল
চিন্তাভাবনা দূর করে যোগ ব্যায়ামের ধ্যানমগ্ন হতে পারেন তবে আপনার সকল ট্রেস
শরীর থেকে বের হয়ে যাবে ।
দুশ্চিন্তাকে হাই প্রেসারের প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় । আপনি
যদি আপনার সকল দুশ্চিন্তা সহজেই শরীর থেকে বের করে দিতে পারেন তবে আপনার হাই
প্রেসার হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা 90% কমে যাবে । এবং এর জন্য
আপনাকে প্রতিদিন নিয়মিত যোগ ব্যায়াম ও মেডিটেশন নিতেহবে ।
কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে
- প্রথমত রোগীর প্রেসার মেপে দেখতে হবে তা ১৮০ / ১০০ এর উপরে গেলে সাথে সাথে চিকিৎসকের নিকটে নিয়ে যেতে হবে ।
- হঠাৎ করে শরীরে ঘাম ঝরতে শুরু করলেন এবং অস্থিরতা বৃদ্ধি পেলে ডাক্তার পরামর্শ নিতে হবে
- অনেক সময় হাই প্রেসার শরীরের মধ্যে সুপ্ত অবস্থা থাকে তখন ঘাড়ের পেছনের অংশ টেনে ধরে এবং অসুস্থ অনুভব হয় এই সময় যত দ্রুত সম্ভব প্রেসার মাপা উচিত এবং ওষুধ গ্রহণ করা উচিত
- গর্ভাবস্থায় প্রেসার বেড়ে গেলে সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে কারণ এটি পূর্ব এক্লাম্পসিয়া রোগের লক্ষণ যা মা ও শিশু দুজনের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে ।
- কোন কারনে যদি প্রতিনিয়ত প্রেসারের ওষুধ গ্রহণ করার পরেও প্রেসারের স্থির অবস্থাতে না আসে অথবা ক্রমাগত বাড়তে থাকে তবে সাথে সাথে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে এবং ডাক্তারের চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
লাইফ স্টাইল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রেশার স্বাভাবিক রাখা
- প্রথমত আপনার প্রতিদিনের পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
- প্রতিদিন সকালে অথবা বিকালে এক ঘন্টা হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন
- খালি পেটে ডিটক্স ওয়াটার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন
- অবশ্যই প্রতিদিন নিয়মিত সঠিক সময় এবং সঠিক পরিমাণে খাবার গ্রহণ করুন
- অতিরিক্ত তেল চর্বি পরিত্যাগ করুন
- যেকোনো ধরনের প্রসেস খাবার অথবা রেডিমেড খাবার ত্যাগ করুন
- অবশ্যই অ্যালকোহল এবং ধূমপান থেকে বিরত থাকুন
- নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন । প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওজন হাই প্রেসার সহ বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বেঁধে নিয়ে আনে
- পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন এবং অতিরিক্ত পরিমাণে সোডিয়াম জাতীয় খাবার ত্যাগ করুন
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন
- আপনার স্ট্রেস এবং দুশ্চিন্তা একদম ঝেড়ে ফেলুন । সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই শরীরকে এবং মানসিক স্বাস্থকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখতে হবে
- প্রত্যেকদিন সময়মতো আপনার প্রেশার দিনে অন্তত একবার চেক করুন
শেষ কথা ঃ হঠাৎ হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায়
সাধারণত আমাদের রক্তের হিস্টলিক ও ডায়াস্টোলিক হিসেবে চাপ নির্ণয় করা হয় যা
১২০/ ৮০ কে সর্বশ্রেষ্ঠ রক্তচাপ হিসেবে ধরা হয় । রক্তচাপ নির্দিষ্ট মাত্রার
ওপরে চলে গেলে এটিকে হাই প্রেসার বলা হয়। সঠিক কোন সময়ে আপনি বুঝতে পারবেন
আপনার ডাক্তারের কাছে যাওয়া তাৎক্ষণিক প্রয়োজন চলেন তা জেনে নেওয়া যাক -
শুধুমাত্র ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমেই আপনি আপনার প্রেসার স্বাভাবিক রাখতে পারবেন না
এর সাথে সাথে আপনার দৈনন্দিন জীবনে লাইফস্টাইল এর সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে
। একটি সুন্দর ও সঠিক জীবন আপনাকে ঔষুধ এবং বাড়তি কোনো চিকিৎসা থেকে
অনেকটাই দূরে রাখতে সক্ষম হবে । কিভাবে আপনি একটি হেলদি লাইফ স্টাইল গ্রহণ
করবেন চলুন জেনে নেওয়া যাক-
হঠাৎ হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায় আলোচনার মধ্যে সর্বোত্তম হলো যদি আপনি সঠিক
মাত্রায় আপনার প্রত্যেকদিনের খাদ্যে সোডিয়াম গ্রহণ করতে পারেন এবং পটাশিয়াম
গ্রহণ করতে পারেন যা আপনার রক্ত প্রবাহকে সচল রাখবে এবং কোনো জামার সৃষ্টি করবে
না ফলে রক্ত প্রবাহ ঠিক থাকলে হৃদযন্ত্রের উপর চাপ কম পড়বে ফলে প্রেসার
স্বাভাবিক থাকবে
তাদের সাথে সাথে প্রতিদিন এর নিয়ম অনুযায়ী ব্যায়াম করা অত্যাবশক । সঠিক
খাদ্য এবং ব্যায়ামি একটি মানুষকে সুস্থ জীবন দিতে পারে । সর্বোপরি ওষুধের
কোন বিকল্প নেই এবং ডাক্তারের চিকিৎসার কোনো বিকল্প নেই। যদি রোগীর অবস্থা
স্বাভাবিকের চেয়ে খারাপের দিকে যেতে থাকে তবে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ
গ্রহণ করতে হসপিটালে যেতে হবে ।
কিন্তু আমরা জানি প্রতিকার হচ্ছে প্রতিরোধই উত্তম তথা ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে কিন্তু তার সাথে সাথে চেষ্টা করতে হবে কিভাবে ঘরোয়া উপায়তে প্রথমে নিজের শরীর স্বাস্থ্য ও মন সুরক্ষিত রাখা যায় । আশা করি উপরোক্ত আলোচনা আপনাদের হঠাৎ হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে উপকার করতে সক্ষম হবে ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url